Posts

Showing posts from May, 2018

কখনও ছুড়ে ফেলে দিও না

জানি একটা আধফোটা বন্য ফুলের কলি আমি। তবুও স্বপ্ন দেখি আমার সৌন্দর্য দিয়ে তোমার চারপাশ রাঙিয়ে দেওয়ার। আমায় তুমি বৃন্ত থেকে ছিড়ে আপন করে নিয়েছো। কিন্তু যেন আগ্রহ ফুরালে- আমি বন্য বলে নর্দমার জলে আমায় ফেলে দিও না।

মাঝে মাঝে ভাবি, আমি না থাকলে পাগলী বাঁচবে কি করে!

প্রিয় পাগলী আমার মৃত্যু কামনা করেছি শুনে, আমায় প্রশ্ন করেছিস, তুমি না থাকলে আমার কি হবে? আমাকে কার কাছে রেখে যাবে? আসলেই আমি যেদিন থাকবো না, সেদিক তোর কি হবে রে পাগলী? হয়তো তোর চোখের পানিতেই আমার লাশের দাফন হবে। তোর চোখের নিচে কালি জমবে। তবে তোকে কাঁদিয়ে, তোর থেকে দুরে অনেক দুরে, না ফেরার দেশে গিয়ে আমিও কি ঠিক থাকতে পারবো পাগলী? হয়তো সেদিন তোকে কাঁদিয়ে আমার নিজে কাঁদার ক্ষমতা থাকবে না। তবুও তুই সুযোগ পেলে একটি বার আমার কাছে গিয়ে দেখিস আমার দু’নয়নের কোণে অশ্রু ফোটা আছে কিনা? শেষবারের মত আমার লাশটাতে শাসন করে দিস, যেন ওপারে গিয়ে আমি তোর কথার অবাধ্য না হই।  আর আমি যখন থাকবো না তখন আমার স্পর্শ করা বোরকাগুলো যখন আলনা থেকে নামাতে যাবি, আমার গন্ধ আসবে তোর নাকে। তবে সেটি লাশ পচার গন্ধ না। ভালোবাসার গন্ধ। তোর প্রতিটি নিঃশ্বাসে আমাকে খুঁজে পাবি। কাঁদিস না পাগলী, তোকে আমি প্রতি রাতে একবার করে দেখে যাব। আমি থাকি আর না থাকি, তুই ভালো থাকিস পাগলী।

তোমায় নিয়ে আমার যত ইচ্ছেগুলো...

ইচ্ছে করে, বড্ড ইচ্ছে করে, তোমার হাতে হাত রেখে, চোখে চোখ রেখে সারাক্ষণ বসে থাকি। সামুদ্রিক ঢেউ, সারি সারি নারিকেল গাছ, মায়াবী চাঁদের রুপালী আলো, তোমার আমার একই ছন্দে পাশাপাশি হেঁটেচলা আর অফুরন্ত মনের কথাগুলো তোমাকে বলা। দু’জনে রুপালী আলোয় বসে গভীর সুমদ্রে মিশে যাওয়া আকাশ দেখা। দু’জনের চোখে নিহিত ভালোবাসাকে উপলব্ধি করা। ইচ্ছে করে তোমার জেদের কাছে সব সময়ই নিজের হার মানা। তোমার মিষ্টি হাসির জন্য নিজের কষ্ট লুকিয়ে রাখা। ইচ্ছে করে তোমার ইচ্ছেগুলো পূরণে নিজের ইচ্ছেগুলো লুকিয়া রাখা।

আমার ভাবনায় তুমি যেমন

তুমি আমার ভাবনায় সারাক্ষণই থাকো। কখনও গোলাপ হয়ে, কখনও প্রজাপতি হয়ে, আবার কখনও পূর্ণিমার চাঁদ হয়ে। আমার ভাবনায়....... তুমি ভোরের শিশির ভেজা লাল গোলাপ, ইচ্ছে করে তোমার মিষ্টি গন্ধে মাতাল হতে। যখন তুমি রোদেলা দুপুর, তখন ইচ্ছে হয় তোমার দিকে উদভ্রান্তের মত ছুটতে। আবার ভাবি তুমি শেষ বিকেলের রোদ, ইচ্ছে করে সিক্ত রোদে নিজেকে বিলিয়ে দিতে।  যখন তুমি নীলিমা প্রান্তরের মেঘ হও, তখন ইচ্ছে করে তোমার দিকে ছুটতে বাতাসের বেগে। ভাবনায় তুমি কখনও পূর্ণিমার চাঁদ, ইচ্ছে হয় তোমায় আলোয় আলোকিত হতে আর সারা রাত তোমার দিকে তাকিয়ে থাকতে। যখন তুমি রাতের নিস্তব্ধতা হও, ইচ্ছে করে জোনাকি হয়ে তোমার কাছে যেতে। যখন তুমি আমার ভাবনায় নীল প্রজাপ্রতি হয়ে আসো, তখন ইচ্ছে করে সাত সুমদ্র আর তের নদী ঘুরে হাজার বছর তোমার সাথে কাটিয়ে দিতে। যখন তুমি আমার কাছে ঝর্ণাধারা, ইচ্ছে করে নিজেকে তোমার মাঝে উৎস্বর্গ করে জীবনের সব দুঃখ, সব হতাশা, সব মন্দগুলো ধুয়ে জীবনকে পবিত্র করতে।

জীবনের শেষ দিনগুলো

আমার জীবনটা একটি বৃক্ষের মত। যখন আমার জীবন বৃক্ষের পত্র-পল্লব ঝড়ে ঝরে পড়ছিল ঠিক তখনই তা তুমি যত্ন করে কুড়িয়ে নিলে। জীবনের ক্লান্তি ঝরা দিনের শেষ যেন সন্ধ্যাতারা হয়ে তুমি আমার জীবনে মিষ্টি আলোয় ভরিয়ে দিলে। একঘেয়েমি দিনগুলোতে তুমি এখন স্বপ্নের রাজকন্যা। এ ব্যস্ত জীবনে যখন লাটিমের মত ঘুরছিলাম, আমার প্রতিটি সকাল-দুপুর, সন্ধ্যা-রাত্রী উদাসীন থাকতো, ঠিক তখনই তুমি হৃদয়ের পরশ দিয়ে নীলাচলে পরম যত্নে জড়িয়ে নিলে। এক সময় সব কিছু থেকে দুরে সরে যখন আমি মানুষ রুপী যন্ত্র ছিলাম, তখনই তোমায় পেয়ে আমি ধন্য হয়েছি। শূণ্য হৃদয় পূর্ণ হয়েছে। আর তাইতো তোমার পাশেই জীবনের শেষ দিনগুলো কাটিয়ে দিতে চাই। যে ক’দিন বাঁচবো, তোমার মাঝেই বাঁচতে চাই।

দূরে থাকার বেদনা

তোমার দুরে থাকার বেদনা আমাকে তিলে তিলে গ্রাস করছে। সেই বেদনার অশ্রু জলে শুধু আমার দুটি গাল প্লাবিত হয় । নির্ঘুম রাতে জানালা দিয়ে নীল আকাশ দেখি আর অপেক্ষার প্রহর গুনি সুন্দর সকালের। তুমি বিনা আমার আত্মা হয়তো কোন দিন মরু পাথরের ধুলি কণা হয়ে যাবে।

প্রথম এবং শেষ চাওয়া..

আমি এখন আর ফুল ভালোবাসি না, ভালোবাসি না পাখি, বিল-নদী-সুমদ্র। আমি শুধু তোমাকেই ভালোবাসি, আর প্রতিটি সময়, প্রতিটি মুহুর্ততোমাকেই ভালোবাসতে চাই; অন্য কিছুই না, অন্য কাউকে না। তোমাকে পেয়ে আমি নিজেকে পেয়েছি, পেয়েছি আমার মাঝের সুপ্ত নিজ আমিকে। ভুল বুঝোনা কখনো, বিশ্বাস রেখো আমার শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত। আমার হৃদয়ের সবটুকু ভালোবাসা শুধু হৃদয় দিয়ে অনুভব করো, বুঝে নিও। আর পাশে থেকো সারাটি জীবন, এইটুকুই প্রথম এবং শেষ চাওয়া।

আজও বৃষ্টি নেমেছিল, শুধু ছিলে না তুমি।

আজকে দুপুরের আকাশটাও সেদিনের মতনই। সেদিন সকালের মতই আজও আকাশ তার রং বদলাচ্ছে। সেদিনের সক্কাল বেলাটায়ও রোদ্দুর খিলখিলিয়ে হেসে উঠেছিলো, কিন্তু পরক্ষণে ধূসর মেঘরঙে ছেয়ে গিয়েছিলো প্রিয় আকাশটা । আর কিছুক্ষণ না যেতেই গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি। তুমি যেন একাকিত্ব না অনুভব করো, তাই ভিজতে ভিজতে চলে আসা। এসে তোমায় না পেলেও, পরক্ষণে তুমিই ভিজতে ভিজতে আসলে। কিছুটা অভিমান ছিল, কিন্তু যখন জড়িয়ে ধরলে, অনেক দিনের না দেখার আক্ষেপটা ভুলেই গেলাম। আজও গনগনে রোদ্দুরের প্রখর উত্তাপ ছেয়ে ছিলো। বেলা গড়িয়ে দুপুর হতেই ধীরে ধীরে মেঘলা হয়ে এলো আকাশ। বৃষ্টি শুরু হলো ঠিক সেদিনের মতনই। তফাত শুধু এইটুকুই সেদিনের মত তুমি আমায় জড়িয়ে ধরবে না, আমার হাতে হাত রাখবে না। চোখ বুঁজলে মনের পর্দায় স্বচ্ছ আয়নার মতন ভেসে আসে সেই সকালটি।

তোমার কোলে মাথা রেখে মৃত্যুকে আলিঙ্গন করাই আমার শেষ অভিপ্রায়

আমার জীবনটা অনেকটা শুকনো পাতার মত। হয়তো কোন এক গোধূলি লগ্নে ঝরে গিয়েছি। আমারও একটি সাদা ক্যানভাস রয়েছে। তুমি কি পারোনা আমার জীবনের সাদা ক্যানভাসে রঙিন আলপনা হয়ে থাকতে। হয়তো এ জীবন অভিশপ্ত, তাই বলে কি একমুঠো ভালোবাসা পাওয়ার অধিকারও আমার নেই। তুমি কি আমায় এ মিছে অন্ধকার জীবন থেকে মুক্তি দিতে পারো না। হয়তো অনেক মিথ্যে বলেছি। হয়তো সব কিছুই অভিনয়। হয়তো বা তোমার অনেক ক্ষতি করেছি, তাই বলে কি আমায় ছুড়ে ফেলে দিতে পারবে? মৃত্যুর পথে হেঁটে বহুদুর এগিয়েও গিয়েছি, আবার ফিরেও এসেছি। কারন, তোমার কোলে মাথা রেখে মৃত্যুকে আলিঙ্গন করাই আমার শেষ অভিপ্রায়। বিশ্বাস করো প্রিয়তমা, আমার ভালোবাসার মাঝে এতটুকু অভিনয় নেই।